মিরাজুল ইসলাম
ছেলেঃ বাবা রাস্তার পাশে মরিচা পড়া ঐ জিনিসটা কী?
বাবাঃ ঐটা সরকারি টিউবওয়েল।
ছেলেঃ বাবা, আমি টিউবওয়েলটির সাথে কথা বলতে চাই।
বাবাঃ জি বলো,
তোমার নাম কি ও পরিচয় দিবে দয়া করে?
আমি সরকারি টিউবওয়েল। লোকজন আদর করে কলের পাড় বলে ডাকে। আমি সৃষ্টি হই লোহার দ্বারা। নানান মেশিনের দ্বারা আমাকে লম্বাটে আকার দেয়া হয়। আমার হাতলে চাপ দিলে সমুদ্রর তলদেশ থেকে নিয়ে আসি ঠান্ডা, পরিষ্কার জীবাণু মুক্ত পানি। আমার গুরুত্ব সবাই মূল্যায়ন করে না। তবে, আমি সকলেরই দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় যন্ত্র। কেউ বা নোংরা হাতে, কেউ আবার পরিষ্কার হাতে আমার হাতলে চাপ দেয়। কিন্ত, আমি তাতেও কিছু মনে করি না। আমার আর্তনাদ হচ্ছে, এখন তো ডিজিটাল যুগ।সবার ঘরে ঘরে সাবমার্চিবাল পাম্প। দিন দিন আমার চাপ কমে যাচ্ছে। আমি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হলেও, স্থানীয় প্রভাবশালী, দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তিবর্গরা আমাকে অবৈধভাবে তাদের বাসায় ব্যবহার করছে। আমি যে আপনার সাথে কথা বলছি, আমার টিকে থাকার হার শতকরা এক হাজারে একটি টিউবওয়েল। আবার কোনোও কোনও এলাকায় আমার ছেলেমেয়েদের হাতল, পাইপসহ পুরো শরীর চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। আমি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার অথবা রাষ্ট্রীয় প্রধানের আশ্রয় চাই। জানি না আমার এই আর্তনাদ কবে যে বাস্তবায়ন হয় দেখার অপেক্ষায় রইলাম।